রমজান মাসে
সুস্থ থেকে রোজা পালন
ইসলামী ক্যালেন্ডারের নবম মাস
রমজান হল ধৈর্য, ত্যাগ ও আত্মসংযমের মাস। রমজান মাসে, মুসলমান ভাই
বোনেরা ভোরে সেহরি খেয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখেন। রমজান মাসে সুস্থ থাকতে
রোজা পালনে কিছু নিয়মাবলী অনুসরণ করুন যা স্বাস্থ্য উন্নত করবে-জানালেন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ
কলিমুজ্জামান মোল্লা।
ইসলামী ক্যালেন্ডারের নবম মাস রমজান হল ধৈর্য, ত্যাগ ও আত্মসংযমের মাস। রমজান মাসে, মুসলমান ভাই বোনেরা ভোরে সেহরি খেয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখেন। রমজান মাসে সুস্থ থাকতে রোজা পালনে কিছু নিয়মাবলী অনুসরণ করুন যা স্বাস্থ্য উন্নত করবে-জানালেন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ কলিমুজ্জামান মোল্লা।
সেহেরিতে (ভোরের খাবার)
কি খাবেন?
সেহেরি এড়িয়ে না গিয়ে, হালকা সেহেরি
খান। সেহেরি না খেলে রোজার সময়কাল দীর্ঘায়িত হবে ফলে ইফতারের সময় অতিরিক্ত
খাওয়া হয়ে যেতে পারে ও অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। উচ্চ আঁশযুক্ত
সিরিয়াল, ফল বা সবজি ও প্রোটিন খাবার খাওয়া উচিত।
প্রোটিনের জন্য দুধ, দই খেতে পারেন। সেহেরিতে পর্যাপ্ত জল
পান করে নিজেকে হাইড্রেট করুন। ভোরে কফি এবং চা যতই লোভনীয় হোক না কেন তা এড়িয়ে
চলা উচিত।
ইফতারের (সূর্যাস্তের পরের
খাবার) সময় কি খাবেন?
জল ও খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু
করুন। খেজুর ফাইবার ও ক্যালোরির বড় উৎস। নিজেকে রিহাইড্রেট করার চেষ্টা করুন।
রিহাইড্রেটের জন্য জলই শ্রেষ্ঠ বিকল্প। ডায়াবেটিস রোগীরা লেবু জল পান করতে পারেন।
চিনিযুক্ত এবং ক্যাফিনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলি ডিহাইড্রেশন করে। ভাজা,
নোনতা খাবার এড়িয়ে চলুন। গোটা শস্য, ফলমূল
খান। তরমুজ এবং সবুজ সালাদ জাতীয় হাইড্রেটিং খাবার খান। অনেকে ইফতারেই অন্য সময়ের
তুলনায় অধিক ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেয়ে নেয়। ইফতারে অতিরিক্ত না খাওয়া উচিত।
ইফতারের অতিরিক্ত খাবার শরীরের ক্ষতি করতে পারে এবং হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
রাতের খাবারে কি খাবেন?
*ডি-হাইড্রেশন থেকে
রক্ষা পেতে পর্যাপ্ত জল পান করুন।
*অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন ভাজা, খুব বেশি মিষ্টি, চর্বিযুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত মাংস, মাখনযুক্ত পেস্ট্রি এড়িয়ে চলা উচিত।
*খাবারে লবণ কম পরিমাণে খান।
*শাকসবজি ও ফলমূল খান বেশি বেশি করে।
*স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের জন্য চর্বিহীন মাংস, মাছ, পনির, দুধ ও ডিম খেতে পারেন। স্বাস্থ্যকর প্রোটিন আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি সরবরাহ করে।
*অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন ভাজা, খুব বেশি মিষ্টি, চর্বিযুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত মাংস, মাখনযুক্ত পেস্ট্রি এড়িয়ে চলা উচিত।
*খাবারে লবণ কম পরিমাণে খান।
*শাকসবজি ও ফলমূল খান বেশি বেশি করে।
*স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের জন্য চর্বিহীন মাংস, মাছ, পনির, দুধ ও ডিম খেতে পারেন। স্বাস্থ্যকর প্রোটিন আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি সরবরাহ করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা
রাখা যাবে?
কিছু ডায়াবেটিস রোগীর রোজার ফলে
সমস্যা হতে পারে।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীদের সাধারণত রোজা না
করার পরামর্শ দেওয়া হয়। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে
গিয়ে হাইপোগ্লাইসিমিয়া,
গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিসের মত জটিল
সমস্যা দেখা দিতে পারে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর ওষুধের মাধ্যমে
রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে,
রোজা রাখতে পারেন। তবে ঔষধের সময় ও ডোজ নির্ধারনে আপনার চিকিৎসকের
পরামর্শ গুরুত্বপূর্ণ। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা না রাখা উচিত।
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা গেলে বাড়িতে গ্লুকোমিটারে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা
দেখা উচিত।
হৃদরোগীদের কি রোজা রাখা
যাবে?
আনস্টেবল এনজাইনা, মায়োকার্ডিয়াল
ইনফার্কশন, ক্রিটিক্যাল অওরটিক স্টেনোসিস, HOCM, সিভিয়ার পালমোনারি হাইপারটেনশন, অ্যারিথমিয়ার রোগীদের রোজা না রাখা উচিত। স্থিতিশীল হৃদরোগ ও
উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের রোজা রাখা নিরাপদ। হৃদরোগযুক্ত রোগীদের রোজা রাখার আগে
ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কিডনি রোগীদের রোজা রাখা
যাবে?
ক্রনিক কিডনি রোগ (CKD) ও
নেফ্রোটিক-রেঞ্জ প্রোটিনিউরিয়া রোগীদের রোজা না রাখা উচিত। কিডনির কার্যকারিতা
স্থিতিশীল থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে রোজা রাখতে পারেন। উচ্চ পটাসিয়াম এবং
ফসফরাসযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
থাইরয়েড রোগীদের রোজা
রাখা যাবে?
হাইপোথাইরয়েড রোগীরা রমজান মাসে
নিরাপদে রোজা রাখতে পারেন। রোজা রাখলে থাইরয়েড গ্রন্থিতে হরমোনের মাত্রা কমে। তাই
TSH এর
মাত্রা অল্প বৃদ্ধি পায়, তবে রমজানের পরে TSH স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। খালি পেটে লেভোথাইরক্সিন খান। ইফতারে
লেভোথাইরক্সিন খেয়ে ১ ঘন্টা পরে খাবার খেতে পারেন। সেহেরির ১ ঘন্টা আগে অথবা
ইফতারের ৩-৪ ঘন্টা পরে লেভোথাইরক্সিন খাবেন।
হালকা থেকে মাঝারি
হাইপারথাইরয়েডিজমের রোগী রোজা করতে পারেন। বেশি লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদের
ডিহাইড্রেশন, ডায়রিয়া বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন থাকতে পারে। তাদের উচিত ডাক্তারের সাথে
পরামর্শ করা। রোজা রাখা অবস্থায় হাইপারথাইরয়েডিজম রোগীদের তেজস্ক্রিয় আয়োডিন
থেরাপি ও অস্ত্রোপচারের মতো চিকিৎসার গুলি এড়িয়ে চলা উচিত।
রোজা রাখা অবস্থায় কি
করবেন?
*তাপমাত্রা বেশি
থাকলে রোদ এড়িয়ে ঠান্ডা এবং ছায়াযুক্ত জায়গায় থাকুন। রোদে থাকলে হালকা
ঢিলেঢালা এবং হালকা রঙের পোশাক পরুন।
*মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া উচিত।
*ধূমপান,তামাক এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন। যেহেতু রমজান মাসে এগুলি থেকে ১৫ -১৬ ঘন্টা বিরত থাকেন। তাই রমজানই হল এই কুঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করার উপযুক্ত সময়।
*মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া উচিত।
*ধূমপান,তামাক এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন। যেহেতু রমজান মাসে এগুলি থেকে ১৫ -১৬ ঘন্টা বিরত থাকেন। তাই রমজানই হল এই কুঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করার উপযুক্ত সময়।
*একটিভ থাকতে দিনের
যে কোনও সময় ব্যায়াম করুন। দিনের বেলায় তীব্র ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন কারণ আপনার
ডিহাইড্রেশন বেড়ে যেতে পারে। ইফতারের আগে হাঁটা বা স্ট্রেচিংয়ের মতো কম থেকে
মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম করা যেতে পারে।
*ভোরে সেহেরির জন্য ঘুম থেকে ওঠার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই ঘুমের রুটিন তৈরি করুন। সুস্থ থাকতে দিনে ৭ - ৮ ঘন্টা ঘুম জরুরী। যোগাযোগ: ৯২৩৯০৩৩৩০৩/৯২৩৯০৪৪৪০৪
*ভোরে সেহেরির জন্য ঘুম থেকে ওঠার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই ঘুমের রুটিন তৈরি করুন। সুস্থ থাকতে দিনে ৭ - ৮ ঘন্টা ঘুম জরুরী। যোগাযোগ: ৯২৩৯০৩৩৩০৩/৯২৩৯০৪৪৪০৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন