। ১. ডায়াবেটিস
রোগী যদি রোজা রাখতে চায়, তবে কমপক্ষে তিন মাস থেকে তার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে। রক্তশর্করা কিভাবে গ্লুকোমিটারের
সাহায্যে নিজে পরীক্ষা করতে হয়, তার প্রশিক্ষণ নেওয়া দরকার। এই ব্যাপারে একটা কথা
মনে রাখা উচিত যে গ্লুকোমিটারের সাহায্যে রক্ত পরীক্ষা করলে রোজা ভঙ্গ হয় না।
রোজার আগে কিডনি, লিভার, কোলেষ্টেরলের পরীক্ষা করা উচিত।
২. পর্যাপ্ত
পরিমান জল খাওয়া উচিত।
৩. রোজাদার
যদি কখনও শারীরিক অসুস্থতা বোধ করেন, তবে সঙ্গে সঙ্গে সম্ভব হলে গ্লুকোমিটারের
সাহায্যে রক্তশর্করা পরীক্ষা করতে হবে এবং দরকারে রোজা ভাঙ্গতে হবে।
হাইপারটেনশন
রোগীরা রোজা রাখতে চাইলে কি কি নিয়ম মানা উচিত-
হাইপারটেনশন
বা উচ্চ রক্তচাপ রোগীরা রোজা রাখতে পারেন যদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে।
রক্তচাপের স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণের মাত্রা হলঃ-
সিস্টোলিক
ব্লাড প্রেসার (SBP)
- ১০০-১৪০ (মি.মি মার্কারি)
ডায়াস্টোলিক
ব্লাড প্রেসার (DBP)- ৬০-৯০ (মি.মি মার্কারি)
এক্ষেত্রে
একটা বিষয়ে বিশেষ ধ্যান দেওয়া উচিত। কোন কোন রোগীর উচ্চরক্তচাপের জন্য
ডায়ইউরেটিক গ্রুপের ওষুধ চল যা শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বের করে দেয় এবং রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে রাখে। রোজাদার ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি এরকম ওষুধ চলে তাহলে শরীরে জলে
মাত্রা কম হতে পারে যাকে ডিহাইড্রেশন বলে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এজাতীয় ওষুধ
সেবন করা উচিত।
ডায়াবেটিস
রোগীর রোজা রাখতে চাইলে কি কি নিয়ম মানা উচিত?
ক. রক্তশর্করা
নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে (কমপক্ষে তিনমাস আগে থেকে )।
খ. রক্তশর্করা
খুব কম (হাইপোগ্লাইসেমিয়া- <৭০ মি.গ্রা/ডে.লি) বা খুব বেশি (হাইপারগ্লাইসেমিয়া--
>৩০০ মি.গ্রা/ ডে.লি) যেন না হয়।
গ.নিয়মিত
আহার, নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।
খাওয়া
দাওয়া কেমন হওয়া উচিত?
ডায়াবেটিস
রোগীর ক্ষেত্রে এক সঙ্গে খুব বেশি খাবার খাওয়া,
আবার অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকা কোনটাই উচিত নয়। কিন্তু রমজান মাসে যেহেতু
ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কিছু খাওয়া নিষেধ তাই ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে একটু
অসুবিধাজনক। তবে ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত যদি তিন থেকে চারবার খাবার খায় তাহলে
বিশেষ অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে সেগুলি
হলঃ
ক. পানির পরিমান
বেশি খেতে হবে ২-৩ লিটার। চিনির সরবৎ বাদ।
খ. তেলেভাজা
(আলুর চপ, পেঁয়াজী, বেগুনী, ছোলাভোনা) বাদ দিতে হবে।
গ. ফলের
মধ্যে খেজুর, কলা, আঙুর, আম, কাঁঠাল, লিচু বাদ দিতে হবে। তবে আপেল, পেয়ারা, ন্যাসপতি,
কমলালেবু, মোসাম্বি লেবু খেতে পারবেন।
ঘ. একসঙ্গে
খুব বেশি পরিমান খাবার যেন না খাওয়া হয়!
ওষুধ
ঠিকমতো সময় না খাওয়ার ফলে কি অসুবিধা হতে পারে? কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়?
ওষুধ
ঠিকমতো সময়ে না খাওয়ার জন্য রক্তশর্করা বাড়তে পারে আবার একসঙ্গে বা অল্প সময়ের
মধ্যে অনেকগুলো ওষুধ খাওয়ার ফলে রক্তশর্করা কম হয়ে যেতে পারে। এই জন্য রোজার আগে
একজন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে কোন ওষুধ কোন সময়ে
খেতে হবে সে ব্যাপারে।
কোন কোন
ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখবেন না?
ক.
অনিয়ন্ত্রিত রক্তশর্করা (>৩০০ মিগ্রা/ডেলি)।
খ. যাঁদের
রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য দিনে চার বা তার বেশিবার ইনসুলিন নিতে হয়।
গ. আগের
তিন মাসের মধ্যে রক্তশর্করা খুব কম হয়ে গেছে ( বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়েছে) বা
তিনমাসের মধ্যে রক্তশর্করা বেড়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল।
ঘ. গর্ভবতী
মহিলা যদি তাঁর ডায়াবেটিস হয়।
ঙ.যাদের
কিডনির সমস্যা আছে বিশেষ করে স্টেজ ৪ বা ৫ বা যাদের নিয়মিত ডায়ালিসিস করতে হয়।
ডায়াবেটিস
রোগী যদি রোজা রাখতে চায়, তবে কমপক্ষে তিন মাস থেকে তার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে।
রক্তশর্করা কিভাবে গ্লুকোমিটারের
সাহায্যে নিজে পরীক্ষা করতে হয়, তার প্রশিক্ষণ নেওয়া দরকার। এই ব্যাপারে একটা কথা
মনে রাখা উচিত যে গ্লুকোমিটারের সাহায্যে রক্ত পরীক্ষা করলে রোজা ভঙ্গ হয় না।
রোজার আগে কিডনি, লিভার, কোলেষ্টেরলের পরীক্ষা করা উচিত।
চ. যাদের
হার্টের বা মস্তিষ্কের বড় রোগ আছে। যেমন- হার্ট অ্যাটাক বা
প্যারালাইসিস রোগী।
ডায়াবেটিস
রোগী কখন রোজা ভাঙ্গবেন?
ক.যদি রক্তশর্করা
খুব কম হয়ে যায় (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) <৭০ মি.গ্রা/ ডে.লি।
খ.যদি রক্তশর্করা
খুব বেড়ে যায় (হাইপারগ্লাইসেমিয়া) >৩০০ মি.গ্রা/ ডে. লি।
গ.যদি হঠাৎ
করে কোন শারীরিক অসুবিধা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন