নজর রাখুন

ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন -রোজা রাখার উপায় ডাঃ সেখ হাম্মাদুর রহমান_কনসালট্যান্ট, এন্ডোক্রিনলজি এবং ডায়াবেটিস বিভাগ, মেডিকা হাসপাতাল, মুকুন্দপুর, কলকাতা***নিউরো-রোগ আক্রান্ত ব্যক্তি-রোজা রাখার নিয়ম ও সতর্কতা-নিউরো বিশেষজ্ঞ, ডা: এম এম সামিম# # #রমজান মাসে সুস্থ থেকে রোজা পালনে কিছু নিয়মাবলী অনুসরণ করুন যা স্বাস্থ্য উন্নত করবে-জানালেন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ কলিমুজ্জামান মোল্লা।# # #ভারতে আকুপাংচার চিকিৎসার পথিকৃত, ডা: বিজয় কুমার বসুর ১১৩ তম জন্মদিন জাতীয় আকুপাংচার দিবস হিসাবে উৎযাপন# # # মস্তিষ্কের টিউমার, ডাঃ কৌশিক শীল # # #২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হৃদয় দিবস-ডাঃ সৌম্য পাত্র এর স্বাস্থ্যকর অভ্যাসেই রেহাই মিলবে হৃদরোগ থেকে !.##মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ডাঃ অনির্বান রায় এর খুশি মনে সুস্থ থাকুন ! # # #২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হৃদয় দিবস-ডাঃ সৌম্য পাত্র এর স্বাস্থ্যকর !.##মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ডাঃ অনির্বান রায় এর খুশি মনে সুস্থ থাকুন !>Latest news !.

রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮

খুশি মনে সুস্থ থাকুন









  খুশি মনে সুস্থ থাকুন

ডাঃ অনির্বান রায়
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সাইকিয়াট্রি

এস এস কে এম হসপিটাল 

কনসালট্যান্ট সাইকিয়াট্রি,
চাইল্ড এন্ড অ্যাডোলেন্স সাইকিয়াট্রি, পিয়ারলেস হসপিটাল
মানসিক স্বাস্থ্য বলতে কি বোঝায় 
আমাদের সমস্ত দৈনন্দিন কাজের চালিকাশক্তি হল মন। শরীরটাকে যদি কাজ সমাধা করার যন্ত্র হিসাবে ভাবা হয়, তবে মন হল যন্ত্রী। যন্ত্রী ছাড়া যেমন যন্ত্র অচল, তেমনই মন ছাড়া শরীর অচল। তাই কাজ যদি সমাধা করতে হয় তবে যন্ত্র যেমন সচল থাকা প্রয়োজন, তেমনি যন্ত্রীটাও সুস্থ থাকা প্রয়োজন। না হলে কাজ সমাধা হওয়া সম্ভব নয়। মন যদি সমস্ত কাজের ক্ষেত্রে শরীরটাকে ঠিক ঠিক ভাবে চালনা করার মত অবস্থায় থাকে তবে তাকেই মানসিক সুস্থতা বলে।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকার কারণগুলো কি কি 
আমাদের মনকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চাপের মুখোমুখি হতে হয় কখনো কাজের চাপ, কখনও সম্পর্কের চাপ, কখনও আর্থিক,পারিবারিক, বন্ধুমহলের বা সামাজিক চাপ- যা আমাদের মনকে পীড়িত করে মনকে এই সব চাপ সামলে আর্থসামজিক ভাবে একটা সফল জীবনযাপন করতে হয়। প্রত্যেকের এই চাপ সামলানো ক্ষমতা আবার আলাদা। বিশেষত যাদের ক্ষেত্রে এই চাপ সামলানোর ক্ষমতা কম, তাদের ক্ষেত্রে এই চাপগুলো বেশি মাত্রায় পড়লে জীবনের স্বাভাবিক কাজকর্মগুলো সঠিক ভাবে চালানো করা মুশকিল হয়ে পড়ে। তখন বলা যায় আমরা মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো নেই- তা কি করে বুঝবো 
শরীর যেমন খারাপ হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়, তেমনি মন খারাপ হলেও নানা রকম উপসর্গ দেখা দেয়। কখন কখনও এটা ব্যবহারিকযেমন- কম বা বেশি আনন্দ, কম বা বেশি দুঃখ, সন্দেহ প্রবণতা, একই চিন্তা বার বার করার প্রবণতা তেমনি কখনও কখনও জৈবিক যেমন-ক্ষিদে, ঘুম কমে যাওয়া ইত্যাদি। অনেক ক্ষেত্রে আবার মানসিক সমস্যা শারীরিক উপসর্গ নিয়েও দেখা দিতে পারে। যেমন- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, পেটে ব্যথা, বাকরুদ্ধ ও পক্ষঘাতের মত হয়ে যাওয়াএমনকি খিঁচুনির মত উপসর্গ নিয়েও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কাদের ক্ষেত্রে এটা বেশি হয় 
মানসিক সমস্যা যে কারোর মধ্যেই দেখা দিতে পারে। বিশেষত বর্তমান জীবনে আমাদের যত রকম চাপের মুখোমুখি হতে হয়, তাতে মানসিক সমস্যা সম্ভাবনা ক্রমবর্ধমান। আমাদের প্রত্যেকরই চাপ সহ্য করার একটা নির্দিষ্ট ক্ষমতা আছে চাপ সেই মাপকাঠির বেশি হলেই, আমাদের মনের পক্ষে সঠিক ভাবে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়েতখনই দেখা দেয় সমস্যা। সুতরাং আমরা কেউই এই মানসিক রোগ বা সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ ভাবে মুক্ত -তা বলা যাবে না।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকার ফলে কি কি সমস্যা হতে পারে

এর ফলে আমাদের ব্যবহার ও কাজকর্ম ব্যাঘাত ঘটতে পারে যার ফলে আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করা মুশকিল হয়ে পড়েকখনও হয়ত স্বাভাবিক কাজ করতে পারি কিন্তু কাজটা যতটা ভালো হওয়ার কথা ততটা হয় না। অর্থাৎ যতটা সাফল্য পাওয়া সম্ভব তার আগেই থেমে যেতে হয়।
যুব সমাজের এই সমস্যা বেশি হওয়ার কারণ
এখনকার যুবক-যুবতীদের সমাজের মধ্যে প্রচন্ড চাপের মুখোমুখি কাজ করতে হয়। আগে আমাদের এতরকম চাপের মধ্যে কাজ করতে হত না। তখন আমাদের চাহিদা কম ছিল, এখন চাহিদাটা বাড়ছেএখন সমাজের চারিদিকে বিভিন্ন প্রলোভন যত বাড়ছে, তত সেই প্রলোভনগুলো অধিকার করার চাহিদাও বাড়ছে। এবং চাহিদা যত বাড়ছে, তার সঙ্গে সঙ্গে তাল রেখে ক্ষমতার শেষ সীমায় নিয়ে যাচ্ছি নিজেদের। স্বাভাবিক ভাবেই আজকের যুব সমাজ এই চাহিদার পিছনে বেশি মাত্রায় দৌড়াচ্ছে কারণ তাদের দিকেই প্রলোভনটা বেশিএই প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহৃত হচ্ছে, দেখা দিচ্ছে মানসিক সমস্যা।
শরীর খারাপ হলে যেমন চিকিৎসার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে কি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
শরীরের যেমন চিকিৎসা আছে, তেমনি মনেরও চিকিৎসা আছে মূলতঃ মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের দ্বারা আমাদের মন পরিচালিত হয়। তাই মস্তিষ্কের কিছু অংশ বিশেষত নিও কটেক্স বা লিম্বিক সিস্টেম ইত্যাদির কাজের ব্যাঘাত ঘটলেই আমাদের ব্যবহারের সমস্যা দেখা দেয়। মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরণের জৈব রাসায়নিক পদার্থ থাকে। যেগুলো এক স্নায়ু কোষ থেকে অন্য স্নায়ু কোষে উত্তেজনা বহন করে। সেগুলোর পরিমাপের কম-বেশি হলে এই মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। যতদিন যাচ্ছে ততই এই সমস্যা বাড়ছে 
এখন চিকিৎসা বিদ্যায় সবচেয়ে দ্রুত বিকাশিত হচ্ছে স্নায়ু বিজ্ঞান। যার ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সমস্যা এখন চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হচ্ছে। এবং সমস্ত কাজ স্বাভাবিক ভাবে করতে পারাও সম্ভব।
সমাজ থেকে চাপ পুরোপুরি মুক্ত করা সম্ভব নয়-তাহলে
অবশ্যই। সমাজ থেকে চাপ পুরোপুরি মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাই যাদের মানসিক রোগ হওয়ার সম্ভবনা/হওয়ার প্রবণতা বা প্রচুর মানসিক চাপ আছে তাদের একটু সর্তক থাকতে হবে। স্ট্রেসটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে একটা ওষুধ প্রয়োগ করা থাকলে সে স্বাভাবিক ভাবে কাজকর্ম করতে পারে। হয়ত ওষুধটা তৎক্ষণাৎ বন্ধ করা যায় না, বহুদিন ধরে এটা চালাতে হতে পারেযেমন –হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস ইত্যাদি সমস্যায় চটজলদি ওষুধে সমাধান হওয়া সম্ভব নয়। তেমন এক্ষত্রেও তাই। তবে –হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস এর মত দীর্ঘদিন হয়ত ওষুধটা চালাতে হয় না, তবে বেশ কিছুদিন চালিয়ে যেতে হয় সেই পরিস্থিতিটা কাটিয়ে উঠার জন্য। দেখা গেছে ৭০-৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ওষুধ খেয়ে সুন্দর ভাবেই কাজকর্ম চালানো সম্ভব হচ্ছে
কি ধরণের চিকিৎসা প্রয়োজন হয়
মানসিক ভাবে ঠিক কতটা অসুস্থ তা বুঝে অর্থাৎ রোগের মাপকাঠি দেখে তার যথাযথ চিকিৎসা করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ওষুধ দিয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। সেই সঙ্গে সাইকোথেরাপিরও খুব প্রয়োজন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে যেমন শরীরের সক্ষমতা বাড়ে, চাপ নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে, তেমনিই মন এরও যদি‌ নিয়মিত ব্যায়াম করা যায় তাহলে মন এর  সক্ষমতা বাড়বে, মন এর কাজ করার ক্ষমতা বাড়বে। ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে যেমন অসুস্থ শরীরকে আস্তে আস্তে সুস্থ করে তোলা সম্ভব, তেমনই সাইকোথেরাপির মাধ্যমে অসুস্থ মন-কে সুস্থ করে তোলা সম্ভব উপযুক্ত সাইকোথেরাপির মাধ্যমে। সেজন্য দরকার দক্ষ সাইকোথেরাপিস্ট এর
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়গুলো কি কি
মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখায় বাঞ্ছনীয়।
অসুস্থ হয়ে পড়ার আগেই, মনের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া জরুরী।
যার যা ভালো লাগে সেদিকে বেশি সময় ব্যয় করা উচিত। মনের প্রশান্তি টা খুবই প্রয়োজন।
পরিবারের যতটা পারেন বেশি সময় কাটান
নিজের হবি বা নিজের ভালো লাগা অভ্যাসগুলোর প্রতি বেশি সময় ব্যয় করুন
নিয়মিত আধ ঘন্টার মত শরীর চর্চা করুন। মন ভাল রাখার একটা অন্যতম উপায় এটা
সমাজিক ভাবে টিকে থাকতে গেলে ইঁদুর দৌড় হয়ত এড়ানো যাবে না। তবে মাঝে মাঝে ভাবা উচিত দৌড়াচ্ছি কেন? আমি কি পেতে চাই জীবন থেকে এবং আমি খুশি তো এই জীবনে।
মাঝে মাঝে জীবনের মূল্যায়ন জরুরি এবং তার ভিত্তিতে নিজের লক্ষ্য এবং প্রয়োজনগুলোকে পরিবর্তন করে নেওয়া জরুরিনতুন করে দৌড় শুরু করার জন্য, মাঝে মাঝে ছুটি নেওয়াও জরুরি।
মিউজিক থেরাপির ভূমিকা
মিউজিক মানসিক প্রশান্তির একটা অঙ্গ। মিউজিক থেরাপিতে নিশ্চয়ই কিছুটা উপকার হবে। তবে মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার পরে শুধু মিউজিক থেরাপি দিয়ে উপকার পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
মিউজিক থেরাপির  সাথে সাথে অন্যান্য চিকিৎসা বা থেরাপিও জরুরী। তবে এটা নির্ভর করে মানসিক অসুস্থ কতটা তার উপর।
জীবনে মনটাকে ভাল রাখা, মানসিক প্রশান্তি এবং নিজেকে আরো ভাল ভাবে বিকাশিত করার জন্য মিউজিক থেরাপির একটা গুণ আছে সেবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
মানসিক স্বাস্থ্য  সুস্থ রাখতে হলে বিশেষজ্ঞ হিসাবে আপনার পরামর্শ
নিয়মিত জীবনযাপন করুন।
নিজের প্রয়োজন বা লক্ষ্যগুলোকে মাঝে মাঝে পূর্ণমূল্যায়ণ করুন। সত্যিই সেগুলো আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। পরিবারের স্বাস্থ্যের প্রতিও যত্নবান হন
যত্ন নিন নিজের প্রতি।
বিশ্বাস রাখুন নিজের উপর
সময় ভাল খারাপ চলতেই থাকে। অন্ধকারের পরেই আসে আলো, আবার আলোর পরেই আঁধার। জীবনে দুটোই সত্য। দুটোরই আলাদা মাধুর্য্য আছে। যে অবস্থাতেই থাকুন তার ভাল দিকটার কথা মাথায় রাখুন। আমাদের জীবন সর্বদাই অর্ধেক। সেটা আপনি অর্ধেক ভর্তি দেখবেন না, অর্ধেক খালি- সেটা কিন্তু আপনার উপর নির্ভর করছেভর্তিটুকুর দিকে নজর রাখুন। মন অনেক ভালো থাকবে। নিজেও অনেক ভালো থাকবেন।
সাক্ষাৎকারঃ ওসিউর রহমান, ৭৯৮০১৫৫২৭৭
 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured Post

ডায়াবেটিস,হাইপারটেনশন রোজা রাখার উপায়

        ডায়াবেটিস ,   হাইপারটেনশন       রোজা রাখার উপায় ডাঃ সেখ হাম্মাদুর রহমান কনসালট্যান্ট, এন্ডোক্রিনলজি এবং ডায়াবেটিস বিভাগ, মেডিকা হা...