নীরব ঘাতক উচ্চ রক্তচাপ
ডাঃ সেখ হাম্মাদুর রহমান
অ্যাসোসিয়েট কনস্যালট্যন্ট, মেডিকা হাসপাতাল
উচ্চ রক্তচাপ জীবনের জন্য হুমকি
স্বরূপ। চিকিৎসা না করলে গড় আয়ু হ্রাস পেতে পারে। তবে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে উচ্চ
রক্তচাপজনিত রোগ মৃত্যুর হার ৮০ ভাগ কমানো সম্ভব।
এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, যে
বিশ্বব্যাপী উচ্চ রক্তচাপের শিকার প্রায় ১০ জন লোকের মধ্যে ৩ জন। বিশ্বে উচ্চ
রক্তচাপের যন্ত্রনা ভোগ করছে প্রায় ১.৮ বিলিয়ান মানুষ এবং সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়
হচ্ছে এদের মধ্যে কেউ কেউ এবিষয়ে অবগত হওয়া সত্বেও এর জন্য কোনও চিকিৎসা নেয় না।
ফলে নিজের অজান্তে উচ্চ রক্তচাপ জেঁকে বসে শরীরে। তৈরী হয় শরীরে ভয়াবহ সব সমস্যা।
মূলতঃ অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, জনসচেতনতার অভাব, আবার উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে অবগত
হওয়া সত্বেও চিকিৎসকের কাছে না যাওয়ার কারণেই রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন আজ ভয়াবহ
সমস্যা রূপে দেখা দিয়েছে।
হাইপারটেনশন কি
এটা হল একধরনের রোগ। যেখানে রক্তচাপ
স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী থাকে। সাধারণত মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ 120/80 mmHg ।
লিঙ্গভেদ ও বয়সের কারণে রক্তচাপ অনেক সময় স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশী হতে পারে। যখন রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী হয় তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলে। সাধারণত রক্তচাপ 140/90 mmHg-এর সমান বা বেশী হলে তাকে হাইপারটেনশন বলা হয়।
লিঙ্গভেদ ও বয়সের কারণে রক্তচাপ অনেক সময় স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশী হতে পারে। যখন রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী হয় তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলে। সাধারণত রক্তচাপ 140/90 mmHg-এর সমান বা বেশী হলে তাকে হাইপারটেনশন বলা হয়।
হাইপারটেনশন আক্রান্ত মানুষের
সংখ্যা প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ।
হাইপারটেনশন কেন হয়
হাইপারেটনশন এর জন্য রিস্ক
ফ্যাক্টারগুলো হল-
ক. বয়সজনিত কারণ
খ. লবণ বেশী পরিমানে খাওয়া,
গ. ওজন বেশী/ ওবিসিটি
ঙ.কোলেস্টেরল এর সমস্যা
চ. নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীর চর্চা
না করা
ছ. ধূমপান
জ. মদ্যপান
ঝ. টেনশন- মানসিক/ সামাজিক
এগুলো ছাড়া যাদের থাইরয়েড, হার্ট
বা কিডনির রোগ আছে তারা উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে ভুগতে পারেন।
অনেক সময় ওষুধের
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে রক্তচাপ বাড়তে পারে বিশেষ করে স্টেরয়েড এবং মানসিক রোগের
ওষুধ সেবনের ফলে।
হাইপারটেনশন লক্ষণগুলো কি কি
বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে
উচ্চরক্তচাপজনিত রোগে বিশেষ লক্ষণ দেখা যায় না। তবে মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, বুক
ধড়ফড় করা, অল্পতে ক্লান্ত হয়ে পড়া, যৌন অক্ষমতা ইত্যাদি হাইপারটেনশনের বহিঃপ্রকাশ
হতে পারে।
রক্তচাপ বাড়লে কি ঘাড় ব্যাথা হয়
হতে পারে। বিশেষ করে মাথার পিছনে
এবং ঘাড়ে (অক্সিপেটাল হেডেক) ব্যথা হয়।
হাইপারটেনশন থেকে কি কি রোগ হতে পারে
সারা বিশ্বে ছয় শতাংশ লোকের
মৃত্যুর জন্য দায়ী হাইপারটেনশন। হাইপারটেনশন থেকে হার্ট অ্যাটাক,
হার্ট ফেলিউর,
ব্রেন স্ট্রোক, কিডনি ফেলিউর, পেরিফেরাল আর্টারিয়াল ডিসিজের (পায়ের রক্ত চলাচল জনিত সমস্যা) মত মারাত্মক রোগ হতে পারে। হাইপারটেনশন এইজন্য নীরব ঘাতক বা সাইলেন্ট কিলার বলা হয়।
ব্রেন স্ট্রোক, কিডনি ফেলিউর, পেরিফেরাল আর্টারিয়াল ডিসিজের (পায়ের রক্ত চলাচল জনিত সমস্যা) মত মারাত্মক রোগ হতে পারে। হাইপারটেনশন এইজন্য নীরব ঘাতক বা সাইলেন্ট কিলার বলা হয়।
কী করা উচিত বা কি কি উপায়ে কমিয়ে আনা যায় হাইপারটেনশন
অতি সত্বর ডাক্তারের পরামর্শ
নেওয়া উচিত।
যাদের ওজন বেশি, তাদের ওজন কম
করতে হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম/ শরীরচর্চা করতে
হবে।
বেশী পরিমানে ফলাহার এবং সবুজ
শাকসবজি খেতে হবে।
নিয়মিত প্রার্থনা, যোগব্যায়াম
বিশেষ উপকারী।
রক্তচাপ বেশি থাকলে কি দুধ ডিম নিষেধ
ডাবল টোনড মিল্ক বা দুধের স্বর
বাদ দিয়ে দুধ এবং ডিমের হলুদ অংশ বাদ দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণ কি টেনশন
টেনশন রক্তচাপ বৃদ্ধির অন্যতম
কারণ। তবে জীবনশৈলীর পরিবর্তন করে রক্তচাপ বাড়ার ঝুঁকি কিন্তু অনেকটাই কমাতে পারা
যায়।
এখন কম বয়সের ছেলেমেয়েরা এতে আক্রান্ত হচ্ছে কেন
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, সামাজিক
এবং মানসিক টেনশন, পড়াশুনায় অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগীতা ইত্যাদি এর কারণ। তবে অনেক
সময় থাইরয়েড, কিডনি, হার্ট এবং ডায়াবেটিসের কারণে কম বয়স্কদের ব্লাড প্রেসার বাড়তে
পারে। ওসিউর রহমান-৭৯৮০১৫৫২৭৭
No comments:
Post a Comment